শাশুড়ী বউয়ের ঝগড়া সমাজের সব পরিবারের বর্তমান চিত্র

শাশুড়ী বউয়ের পারস্পারিক দ্বন্দ্ব যেন ক্যান্সারের জীবাণু।

শাশুড়ী বউয়ের পারস্পারিক দ্বন্দ্ব যেন ক্যান্সারের জীবাণু। এ জীবাণু বর্তমানে আমাদের সমাজের প্রায় প্রতিটি পরিবারের রন্ধে রন্ধে প্রবেশ করেছে। শাশুড়ী বউয়ের এ দ্বন্দ্বের জন্য মুলত দুটি বিষয় দায়ী। একটি হলো লোভ আর অপরটি হলো স্বার্থপরতা। দু একটি ব্যতিক্রম বাদ দিয়ে হিসেব করলে দেখা যায়, এর জন্য প্রধানত শাশুড়ীই দায়ী। আবার শুরুর দিক থেকে হিসেব করলে, আগুনের এ খেলা শাশুড়ীই প্রথম শুরু করে। এমন ক্ষেত্রে ছেলের বউ প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে রক্ষার জন্য শুধু লড়াই করে যায়। নীচে এর স্বপক্ষে যুক্তি টানছি।

শাশুড়ী বউয়ের পারস্পারিক দ্বন্দ্ব যেন ক্যান্সারের জীবাণু।

শাশুড়ী বউয়ের সম্পর্ক যেখানে মা মেয়ের মত হবার কথা। সেখানে বর্তমানে সম্পর্কটি দাঁড়িয়েছে দা কুমড়ার মত। এর জন্য শশুড় বাড়ীর পরিবারের নোংরা মানসিকতা এবং লোভ দায়ী। সেকাল থেকেই আমরা ছেলের বিয়ের নামে ব্যবসা করে আসছি। ছেলেকে বিয়ে দিয়ে সবাই মেয়ের বাপের কাছ থেকে যৌতুক এবং উপঢৌকন আশা করে। এটা অলিখিত ভাবে যেন আমাদের অধিকারে পরিণত হয়েছে। বিয়ের পর প্রথম ছয় মাস এক বছর শাশুড়ী, ছেলের বউকে নিজের মেয়ের মতই দেখে। এই সময়ের মধ্যে যদি মেয়ের জন্য গোহনা, ছেলের জন্য গাড়ী না আসে তবেই হয়েছে।

শাশুড়ী বউয়ের পারস্পারিক দ্বন্দ্ব যেন ক্যান্সারের জীবাণু।

সংসার করার জন্য খাট পালং, টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন ফার্নিচার ও আসবাব পত্র তাদের চাই। উৎসব, পার্বণে মেয়ের বাপের বাড়ী থেকে ফল মুল, কাপড় চোপড়, উপহার না আসলেই বিপদ। ছেলের বাড়ীর সবার মুখই থম থমে। সবার মন খারাপ হয় কিন্তু সব চেয়ে বেশী মন খারাপ হয় শাশুড়ীর। কারণ অন্য বাড়ীর সাথে তার আর তুলনা করে বড়াই বা অহংকার করার মুখ থাকে না। শুরু হয় শাশুড়ী বউয়ের মন কষাকষি। এবার শাশুড়ী ছেলের বউয়ের নামে বাড়ীর এবং বাইরের সবার কাছে নিন্দা করা শুরু করে। বউ এর এটা ভালো না, সেটা ভালো না, তার বাপের বাড়ীর লোক ভালো না ইত্যাদি খোঁটা দেয়।

শাশুড়ী বউয়ের পারস্পারিক দ্বন্দ্ব যেন ক্যান্সারের জীবাণু।

অনেক শশুড় শাশুড়ী উঠতে বসতে ছেলের বউকে গালিগালাজ করে। ছেলের বউকে যৌতুকের জন্য শারিরীক নির্যাতনের চিত্রও কম নই। এ সব কারণে শাশুড়ী বউয়ের মধ্যে সম্পর্কের ফাঁটল সৃষ্টি হয়। এমন মানুষ নামক জানোয়ার রূপী লোভীদের জন্য সমাজ আজ কলুষিত। ছেলেকে বিয়ে দিয়ে যদি ব্যবসাই করতে হয়। তবে ছেলেকে বিয়ে দিয়ে নই, বরং শাশুড়ীরই উচিত হবে অসৎ পথে অর্থ উপার্জনের পথ বেছে নেয়া। এ সব জানোয়ারদের সর্বোচ্চ এবং দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিয়ে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত। মুলত এখান থেকেই ছেলে বউ শিখে, কিভাবে শশুড় শাশুড়ীকে পরবর্তীতে শায়েস্তা করতে হবে।

শাশুড়ী বউয়ের দ্বন্দ্বে বউ বিয়ের প্রথমে খারাপ হয় তখন, যখন সে নিতান্তই নীচু মনের ও স্বার্থপর হয়। এমন বউ নিজের বাপের বাড়ী এবং নিজ ছাড়া কাউকেই স্বামীর উপার্জনের ভাগ দিতে রাজি নই। যদি স্বামীকে সে দেহ এবং ছলনার ভালোবাসা দিয়ে একবার বশ করে ভেড়া বানাতে পারে তখনই তার বিজয়। স্বামীর জন্মদাতা বাবা এবং মাকে বঞ্চিত করার জন্য যত ফঁন্দি, সব সে প্রয়োগ করে। এরই ধারাবাহিকতায় শশুড় শাশুড়ী বৃদ্ধকালে, তাদের সন্তানের প্রতি অধিকার ও উপার্জনের হক হতে বঞ্চিত হয়। তখন তাদেরকে হয় ভিটে মাটি ছাড়া হতে হয় নতুবা বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিতে হয়।

দ্বন্দ্ব যুদ্ধের এ লেখায় অতি সামান্য ব্যতিক্রম হিসেবের বাইরে আছে। শাশুড়ী বউয়ের সম্পর্ক নষ্টের মুলে সম্পুর্ণ ভাবে শশুড়-শাশুড়ী ও তাদের পরিবারের লোভ এবং নোংরা মানসিকতা দায়ী। অপর দিকে স্বামীর বাবা মাকে তাদের বৃদ্ধ বয়সে সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ক্ষেত্রে বউ এর স্বার্থপরতা দায়ী। হয়তো একদিন এ দেশের সমাজ হতে এমন লোভ, স্বার্থপরতা এবং নীচু মানসিকতা দুর হবে। তখন সত্যই একটি পরিবার হবে শান্তির নীড়। সে দিনের জন্য আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ও প্রতীক্ষা করতে হবে।

Leave a Reply