শাসন এবং শোষণ অনেকেই করে কিন্তু ন্যায় বিচার করে না!

শাসন এবং শোষণ সবাই করতে পারে কিন্তু ন্যায় বিচার নই!

শাসন এবং শোষণ সবাই করতে পারে কিন্তু ন্যায় বিচার সবাই করতে পারে না। ন্যায় বিচার করতে হলে একজন ব্যক্তিকে উত্তম চারিত্রিক গুনাবলীর অধিকারী হতে হয়। যা আমাদের সবার মধ্যে নেই। অনেকেই হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারেন, তা হলে জগৎ চলছে কি ভাবে! এর উত্তরে বলতে হয়, অনেকের মাঝে উত্তম চারিত্রিক গুনাবলীর যে ছিটে ফোঁটা আছে তা দিয়েই জাগতিক ভারসম্য এখনও বজায় আছে। ন্যায় বিচারক মানে সৎ সত্যবাদী, দয়ালু, দানশীল, স্পষ্টবাদী, বিচক্ষণ। মহানুভ, নির্লোভ, নিরহংকার, সাম্যবাদী, নিরপেক্ষ ও ইর্ষাবিহীন মানুষ। এ ছাড়াও চারিত্রিক দৃঢ়তা ন্যায় বিচারে মুল ভুমিকা রাখে। এখানে বংশগত ঐতিহ্যকে কিন্তু কোন ভাবেই ছোট করা হচ্ছে না, এর ভুমিকাও আছে।

শাসন এবং শোষণ সবাই করতে পারে কিন্তু ন্যায় বিচার নই!

রাজনীতির কলা কৌশলের বদৌলতে এবং সাফল্যে, শাসন ব্যবস্থায় আমরা আমাদের ভিত বা অবস্থান মজবুত করতে পারি। এর ফলে সর্বস্তরে শাসন করার একটি অবারিত সুযোগ হয়। স্বল্প পরিসর ছাড়া বৃহৎ ক্ষেত্রে শাসন ব্যবস্থা বা সার্বিক ভারসম্য রক্ষা করা। কোনদিনই কারো পক্ষে একক ভাবে সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতিতে সবার সম্মিলিত সাহায্যের একান্ত প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর সমস্যার সৃষ্টি হয় মুলত এখান থেকেই। শাসন ব্যবস্থার শীর্ষে থাকা সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির সার্বিক মনোভাব এবং কার্যাবলী সার্বজনীন হবার পরও। তাকে সাহায্যের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ডাল পালার মত ছড়িয়ে থাকা এই আমরাই সর্বস্তরে শাসনের নামে শোষণ করার সুযোগ খুঁজি এবং তা বরাবরই করে থাকি।

শাসন এবং শোষণ সবাই করতে পারে কিন্তু ন্যায় বিচার নই!

আমাদের জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় উপকরণ যথেষ্ট পরিমানে থাকা সত্বেও। শুধু মাত্র সীমাহীন লোভ এবং চাহিদার বশঃবর্তী হয়ে আমরা অন্যকে শোষণ করার চেষ্টায় সর্বদা লিপ্ত। ধরি, দশ জন ব্যক্তি কোন এক চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন। যেখানে মাত্র তিন জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। ক্ষমতা বলে, শাসন দন্ডের ধারক হিসেবে আমি সেখানে নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা রাখি। এখানে অবস্থানের দিক থেকে আমি সব দিক থেকেই স্বচ্ছল অবস্থায় আছি। আমার আর্থিক অবস্থা এবং ধন সম্পত্তির ভিত এতোটাই মজবুত যে। আমার চৌদ্দ পুরুষ যদি সারা জীবন স্বচ্ছলতার সাথে বসে বসে খায় তবুও আমার উপার্জিত অর্থের শেষ হবে না।

তার পরও শোষণ করার হীন ইচ্ছায়। অপেক্ষাকৃত গরীব এবং অস্বচ্ছল দশ জন চাকুরী প্রত্যাশীর কাছে চাকুরী দেবার সুবাদে পাঁচ লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়ে বসেছি। যে আমার চাহিদা মেটাতে পারবে তার চাকুরী হবে, অবস্থা এমনটা। দেখা গেল তিনজন বাবার জমা জমি, জীবনের শেষ সম্বল দিয়ে চাকুরীটা ঠিকই নেবে। কারণ সময়ের প্রেক্ষিতে তাদের চাকুরীর প্রয়োজন আছে। এখানে শাসকের ধারক ও বাহক হিসেবে আমার দ্বারা ন্যায় বিচারের পরিবর্তে অন্যরা ঠিকই শোষিত হচ্ছেন। এ ভাবে এ পৃথিবীতে হাজারো মানুষ হাজারো ভাবে শাসনের মাধ্যমে শোষিত হচ্ছেন এবং ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হচ্ছেন।

Leave a Reply