বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি যথা সম্ভব মানবিক হোন। তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। কারণ তার জীবনের মুল্যবান সময় সমাজ, সংসার, পরিজনের জন্য ব্যয় করেছেন। শেষ জীবনে বৃদ্ধ বয়সে মানসিক ও দৈহিক শক্তি হারিয়ে আজ তারা নিঃস্ব। জীবন নদীর কিনারে এসে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তারা এক সময় সংসারের ঘাঁনি টেনেছেন, সন্তানদের লালন পালন, ভরণ পোষণ, সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। সংসার এবং সন্তানের জন্য তারা অতীতের সুবর্ণ সময় ব্যয় করেছেন। এখন যেই না, সময় এসেছে জীবনকে উপভোগ করার। নিয়তির নির্মম পরিহাসে সবাই যেন একে একে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। দু একটা ব্যতিক্রম ছাড়া, এমন কোন জায়গা নেই যেখানে বয়স্ক ব্যক্তিরা অবহেলিত হচ্ছে না।
আমাদের বাবা মা, দাদা দাদী, নানা নানীসহ সব বয়স্ক ব্যক্তিই। সারা জীবন এবং সমস্ত সম্পদ উজাড় করেছেন সন্তানদের মানুষ করতে। আজ বৃদ্ধ বয়সে তাদের দেহে বল নেই, মনে সাহস নেই। ঠিক এ সময়টাতেই তাদের সুযোগ্য সন্তান তাদের ভরণ পোষণ করে না। বয়স্ক ব্যক্তির কপালে দু বেলা দু মুঠো ভাত ও পথ্য জোটে না। একই সাথে তারা, সন্তান ও নাতি নাতনির সাথে বসবাস করার অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। কোথাও কোথাও এমন কুলাঙ্গার সন্তানও দেখা যায়। বাবা মা কেমন আছেন তার খোঁজটাও যারা নেবার প্রয়োজন মনে করে না।
ঘরের বাইরে বাসে ট্রেনে আমি সিটে বসে থাকা যুবক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বয়স্ক মানুষদের চোখে দেখতে পাই না। টিকিট এর লাইনে আমরা অসহায় বয়স্ক মানুষকে ঠেলে সামনে জায়গা করে নিই। রাস্তা পারাপারের সময় বৃদ্ধকে হাত ধরে রাস্তার ওপারে পৌঁছে দিতে আমরা অস্বস্তিবোধ করি। ট্রেনে, বাসে যাতায়াতের সময় একই সাথে পথ চলা বৃদ্ধের হাতে ধরা ভারী ব্যাগ হাত দিয়ে ধরলে আমাদের ব্যক্তিত্বে লাগে। উপরে তুলে ধরা চিত্র গুলোতে আমরা ইচ্ছে করলেই বয়স্কদের প্রতি একটু মানবিক হতে পারি। পারি মানবিকতার হাত একটু প্রসার করতে!
বাবা মা সহ আপনার পরিচিত এবং বাহিরের যে কোন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে বয়স্ক ব্যক্তিকে মানবিক সাহায্যের মহৎ চেষ্টা করুন। হোক না সেটা ট্রেন, বাস, মিলনায়তন বা কোন রাস্তা পারাপার। আপনার শক্তিশালী হাতের একটু স্পর্শ হয়তো বাঁচাতে পারে একটা মুল্যবান প্রাণ। বৃদ্ধ বয়সে তাদের প্রতি আপনার একটু সহানুভূতি তাদের হৃদয়ে ছড়িয়ে দিতে পারে প্রশান্তির কোমল পরশ। মনে রাখবেন, কালের আবর্তনে স্বাভাবিক নিয়মে আপনি আমিও একদিন তাদের মত অসহায় হবো।