জীবনে সুখের জন্য অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন!

জীবনে সুখের জন্য অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন!

জীবনে অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন, যিনি আপনাকেই অসাধারণ করে রাখবেন। আমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থানে সুখী নই। তাই আমরা আমাদের যা আছে তার চেয়ে ভালো কিছু চাই। আমরা বরাবরই জীবনে জুঁটি হিসেবে অসাধারণ কাউকে কামনা করি এবং খুঁজি। কিন্তু সাধারণের ভীড়ে যে অসাধারণের সংখ্যা অতি নগণ্য তা ভুলে যাই। ভাগ্যচক্রে কেউ কেউ তাদের সঙ্গী হিসেবে পেয়েও যাই। তারা যে আপনাকে আমাকে অসাধরণের মত করে রাখবেন বা দেখবেন এমন মনে করার কোন যুক্তি নেই। ফলে এই অতি ভাগ্যবানরা হতাশ হই এবং জীবনে ছন্দ পতন আসে।


জীবনে সুখের জন্য অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন!

আমরা প্রত্যেকেই এক একটি পৃথক মানুষ। দু একটা ব্যতিক্রম ছাড়া সাধারণ বা অসাধারণ বলে কিছু নই। আমরা নিজের প্রয়োজনে এবং সময়ের দাবীতে যখন যাকে প্রয়োজন সাধারণ বা অসাধারণ ভাবি। অসাধারণ বলতে তাদের বুঝায়, যাদের সৃষ্টিকর্তা কোন একটি দিক থেকে আমাদের চেয়ে বেশী কিছু দিয়েছেন। অথবা আমাদের সাথে তুলনার্থে কিছু কেড়ে নিয়েছেন। যেমন ধরি একটি বিকলাঙ্গ শিশু তার দুটি পা বাঁকা এবং চিকন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা তাকে এতো তুখোড় মেধা দিয়েছেন, সে কোন পড়া একবার পড়লে হুবহু মুখস্ত বলতে পারে। কেউ আপনাকে একবার দেখে অবিকল ছবি আঁকতে পারে। এমন কেউ যিনি আমার বলা কথাগুলো শুনেই হুবহু নকল করে তেমন ভাবে বলতে পারে।

জীবনে সুখের জন্য অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন!

এই যে, উপরের উদাহরণ গুলোই অসাধারণ নির্দেশ করে। কোন বিশেষ কারণে প্রকৃতিগত ভাবে নারী বা পুরুষ হতে সম্পুর্ণ আলাদা মধ্যম লিঙ্গে পরিণত হওয়া ব্যক্তিটি অসাধারণ। এমন হাজারো অসাধারণের উদাহরণ দেয়া যায়, যারা অসাধারণ বৈশিষ্ট নিয়ে প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে পৃথিবীতে এসেছেন। এসব ব্যক্তিরা দেখতে সাধারণত স্বাভাবিক হয়। আবার অস্বাভাবিক হিসেবে দেখার ক্ষেত্রে এদের সংখ্যাও কিন্তু কম নই। কারণ তারা কোন একটা দিক থেকে আমাদের চেয়ে নিশ্চিত কিছুটা সুবিধা বজ্ঞিত। তাই তারা মনের দিক থেকে কখনই চায় না কেউ তাদের মত অসাধারণ হোক। আবার নিজের ক্ষমতা বলে আমরা উপরে বর্ণনার মত কাউকে অসাধারণের কাতারে ফেলতে পারি না।

আপনি হয়তো এ ধারণা মানতে চাইবেন না। যেমন অমুক শিল্পপতির ছেলে, তমুক ক্রিকেটার, জজ, ফুটবলার, শিল্পী ইত্যাদি। এমন আরো অনেককে আমরা অসাধারণের কাতারে ফেলতে চেষ্টা করি যা ভুল এবং ইগোর দ্বারা পরিচালিত ধারণা মাত্র। কারণ আজকের বিখ্যাত একজন ক্রিকেটার তার নৈপুণ্যকে সকলের চেয়ে কিছুটা বেশী ব্যবহার করেছে মাত্র। তাই আজ আমরা তাকে নিয়ে মাতামাতি করি। ক্রিকেটারটি মধ্যবিত্ত গ্রামের ছেলে। সে সেখানেও ক্রিকেট খেলতো, কই তখন তো তাকে নিয়ে আমরা নাচানাচি করিনি। আর আজ কাল অনেক বিত্তশালীর ললনারা ক্রিকেটারের নাম ধরে ” ম্যারি মি” বলতে অজ্ঞান। এসব গভীর ভাবনার বিষয়। এসব সাধারণকে অসাধারণ বানানোর অজুহাত এবং সময়ের চাহিদা মাত্র।

জীবনে সুখের জন্য অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন!

কেউ একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত বা জেলে পরিবার থেকে কঠোর পরিশ্রম, কষ্ট এবং সাধনার মাধ্যমে পড়াশুনা করেছেন। সমস্ত প্রতিকূলতাকে তুচ্ছ করে আজ তিনি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। এ ক্ষেত্রে তিনি অনেকের মধ্যে অসাধারণ। এমন ভাবে বড় বিজ্ঞানী, মনীষী তারাও অসাধারণের কাতারে পড়েন। কেউ পৈত্রিক সুত্রে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে। হতে পারে, সে বড় মাপের মানুষ, তবে কোন ক্রমেই অসাধারণ নই। কর্পদক শুন্য অবস্থা থেকে কেউ পরিশ্রম ও চেষ্টার জোরে যদি খুবই ভালো অবস্থানে পৌঁছে তবে সে অসাধারণ। সৃষ্টিকর্তার দেয়া অথবা ব্যতিক্রম উদাহরণ ছাড়া কাউকে অসাধারণ বানানোর চিন্তা অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন।

জীবনে সুখের জন্য অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন!

জীবনে অসাধারণ নই, সাধারণ কাউকে খুঁজুন, যে আপনাকে অসাধারণ করে রাখবে! সব দিক থেকে নীচু কাউকে জীবনে সঙ্গী হিসেব বেছে নিলে ভালো থাকা সম্ভব। এখানে আমি উচ্চতার দিক থেকে নীচু কাউকে জীবনে সঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে বলছি না। অসাধারণকে হিংসা নই, বরং অসাধারণকে অসাধারণ জীবনে থাকতে দিন, সেই ঢের ভালো হবে। এমন ক্ষেত্রে দেখবেন, সাধারণ ব্যক্তিই আপনাকে অনেক মুল্যায়ন এবং সম্মান করছেন। আমাদের মনে রাখা উচিত জীবনে অসম কোন কিছুই ভালো নই! আর সব চেয়ে বড় কথা হলো, প্রত্যেকের মধ্যেই একটি আলাদা বৈশিষ্ট থাকে, সেটা নিয়ে সন্তোষ্ট থাকলে, জীবনে ভালো থাকা যায়।

Leave a Reply